সুনামগঞ্জ , রবিবার, ১১ মে ২০২৫ , ২৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সীমান্তে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে ভারত পূর্ব নির্ধারিত স্থানে সুবিপ্রবি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ছাতক-দোয়ারাবাজারে লিচুর বাম্পার ফলন, চাষীদের মুখে হাসি জেলা জামায়াতের লিডারশীপ ট্রেনিং ক্যাম্প অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ সেলিনা হায়াৎ আইভী কারাগারে ধানের পর খড়ের জন্য কৃষকের ব্যস্ততা সংগ্রহ হবে আড়াইশ কোটি টাকার গো-খাদ্য সুরমা গিলছে বসতভিটা-কৃষিজমি আতঙ্কে মাছিমপুর গ্রামের মানুষ জামালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আনফর আলী গ্রেফতার হাওরের সমস্যা সমাধানে স্থায়ী উদ্যোগ নেয়া হবে : যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল আরিফ আ.লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপি’র সদস্য হতে বাধা নেই : রিজভী দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিশ্বম্ভরপুর ইউএনও’র পদত্যাগ দাবিতে লংমার্চ হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে গেল স্বামী চলতি মাসে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশে ২৩টি মিটিং করেছে : হাসনাত আব্দুল্লাহ জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্বোধন আমাদের সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জেলা পুলিশের কল্যাণ ও অপরাধ বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত গোলা ভরে ধান তুলে স্বস্তিতে কৃষক সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ভারত ও পাকিস্তান

পথে যেতে যেতে পথচারী

  • আপলোড সময় : ১৮-০২-২০২৫ ০৯:৫৫:০৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-০২-২০২৫ ০৯:৫৫:০৬ পূর্বাহ্ন
পথে যেতে যেতে পথচারী
মাত্র কয়েকদিন আগেই আমরা পালন করে এসেছি ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’। ভালোবাসা শব্দটি দিনে দিনে কেমন জানি পানসে হয়ে যাচ্ছে। প্রচ- শীতে পানি ঠান্ডা হয়ে যেমন বাষ্প হয়ে উপরের দিকে চলে যায়, ঠিক তেমনই ভালোবাসা আমাদের জীবন থেকে ধীরে ধীরে উধাও হয়ে যাচ্ছে। গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন ভারতে। কী অবাক করা কা- নয় কি? একাধারে তিনবারের নির্বাচিত (?) প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। দেশের মানুষকে যদি তিনি ভালোবাসতেন কিংবা দেশের আপামর জনসাধারণও যদি তাকে ভালোবাসতো তাহলে কি এমনটি ঘটতো? দেশকে যদি কেউ ভালোবাসে তাহলে ঐসকল ঘটনার ইতিহাস সৃষ্টি হতো না। ভোটের অধিকার বলপূর্বক হরণ করা, বিরুদ্ধ মতের লোকদের সাথে নিপীড়ন, হত্যা, গুম ইত্যাদি আচরণ কি ভালোবাসার সাথে যায়? যতো বিরুদ্ধ আচরণই হোক না কেন এরাতো এই দেশেরই নাগরিক, এই দেশেরই ভোটার, সাধারণ মানুষ, এদের দোষটা কী ছিল? এটি ছিল রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট। সামাজিক দিকের কথা এ প্রসঙ্গে বলা যায়। মধুর সম্পর্কের স্বামী-স্ত্রী, কতো আপন - কতো কাছের মানুষ। অথচ প্রায়ই দেখি তাদের ভালোবাসার নমুনা। পরস্পর পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস সন্দেহ, বিপরীত আচরণ কোথায় নিয়ে যায় তাদের? আমরা কিন্তু নিয়তই দেখি তাদের মধুর সম্পর্কের কী করুণ পরিণতি। ডেল কার্নেগির একটি উক্তি আছে এমন- “পৃথিবীতে ভালোবাসার একটি মাত্র উপায় আছে, সে হলো প্রতিদান পাওয়ার আশা না করে ভালোবেসে যাওয়া।” এমন কতোজনই আছে আমাদের সমাজে? অথচ সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন-এর ভালোবাসা ছিল সত্যিকারের ভালোবাসা। ষোড়শ শতকের ১৪ ফেব্রুয়ারি আধুনিক এই ভালোবাসা দিবসটি পালন নিয়ে জনমনে আগ্রহের সৃষ্টি হয়। এই দিনে বিশেষতঃ তরুণ-তরুণীরা তাদের প্রিয়জনের কাছে প্রেমের বার্তা পাঠায়। কেউ কেউ ফুলের তোড়াও পাঠিয়ে তাদের ভালোবাসার জানান দেয়। আজকাল কার্ডের প্রচলনও ভালোবাসাটির গুরুত্ব অনেক বাড়িয়ে দেয়। ব্যবসায়ী সমাজ বিশেষ করে ফুল বিক্রেতারা তাদের আয়ের একটি উৎস খুঁজে নেয় ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস জড়িয়ে আছে রোমান দেব-দেবীর পূজা-অর্চনায়। তাদের এই বিশ্বাসে নতুন মাত্রা যোগ করেন মি. ভ্যালেন্টাইন। তিনি ছিলেন একধারে ধর্মযাজক ও একজন চিকিৎসক। যীশু খ্রিস্টের জন্মদিনে ৩ জন এসেছিলেন উপহার নিয়ে। এর সাথেও জড়িয়ে আছে ভালোবাসা দিবসটির ইতিহাস। ২৭০ খ্রিস্টাব্দে দেব-দেবীর পূজা-অর্চনাকে মেনে নিতে পারেননি রোমের স¤্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস। এ জন্য সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনকে তিনি দোষারোপ করলেন। নিজের ভালোবাসায় ছেদ পড়ায় তিনি সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনকে এক পর্যায়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন। শুরু হয় একতরফা বিচার। কারাগারে নিক্ষেপ করা হল ভ্যালেন্টাইনকে। ঘটনার প্রতিবাদ করল একদল লোক। তারা আসক্ত হয়ে পড়ল ভ্যালেন্টাইনের প্রতি। বিশেষ করে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কারাগারে ফুল নিয়ে আসতে থাকল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসার কথা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভালোবাসা দিবসের কথা ছড়িয়ে পড়লেও বাংলাদেশে এর ঢেউ এসে লাগে অনেক পরে। ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দের কথা। প্রথিতযশা সাংবাদিক শফিক রেহমান এ বিষয়ে প্রশংসার দাবি রাখেন। তিনি সম্পাদনা করতেন সাপ্তাহিক যায়যায়দিন ও সাপ্তাহিক মৌচাকে ঢিল নামে দুটি পত্রিকা। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘লাল গোলাপ’ নামে একটি টকশোও করতেন। বাংলাদেশে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের সূচনা করেন ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশের মাধ্যমে। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে ভালোবাসা দিবস নিয়ে ৬৪ পৃষ্ঠার একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেন। সাধু সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন যে দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে স্থাপন করে গেছেন তা একটি ইতিহাস। প্রকৃত অর্থে ভালোবাসা ঠুনকো হয়ে পড়েছে। উন্নত বিশ্বে বিয়ে ও সন্তানের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। প্রতি বছর এই দিবসটি উপলক্ষ করে ছেলেমেয়েরা পিতা-মাতাকে উদ্দেশ্য করে একটি ছাপানো কার্ড পাঠায়। এই কার্ড পেয়ে ভুক্তভোগী পিতা-মাতা তাদের ভালোবাসার কথা স্মরণ করে। বর্তমান সময়ে পিতা-মাতা সন্তানের কাছে অনেকটাই উপেক্ষিত। যে জন্য উদ্ভব বৃদ্ধাশ্রমের। সারাদেশে বেশকিছু বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা হওয়াই জানিয়ে দেয় আমাদের সমাজে ভালোবাসা কি অবস্থানে আছে। আজকাল ‘বিচ্ছেদ’ শব্দটি হরহামেশাই শোনা যাচ্ছে। তারপরও বছরের একটি দিন অন্তত ভালোবাসার বার্তা এলে তা মন্দ হয় না। দুঃখ-কষ্ট আর জরাজীর্ণ জীবন এইটুকু সুখ আমরা পাই - এ কথা কম না।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স